About Samajsiksha

‘শিক্ষা’ বিষয়টি  সমাজ ব্যতীত স্ফুরিত হতে পারে না। কারণ সমাজজীবন শিক্ষিত হলেই উন্নত  জাতি (Nation) গঠিত হয় । ‘লোকশিক্ষা’ – কথাটি যুগরোগবৈদ্য শ্রীরামকৃষ্ণ মুখনিঃসৃত ‘লোকশিক্ষা’ কেবল অভিনয়  করলেই হয় না , নানান সমাজমূলক  অগ্রগতিও লোকশিক্ষার অন্তর্ভুক্ত। 1956 সালে স্বামী লোকেশ্বরানন্দজি  গ্রামের সার্বিক উন্নতির উদ্দেশে তৈরি করলেন লোকশিক্ষা পরিষদ। আর এই পরিষদের কথা গ্রামে গঞ্জে মানুষ যাতে জানতে পারে – তার জন্য তাত্ক্ষণিক ভাবে একটি পুস্তিকা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল – যার নাম দেওয়া হলো – যার নাম দেওয়া হল ‘লোকশিক্ষা সমাচার’।মাত্র ২০ পৃষ্ঠায় এই  ‘লোকশিক্ষা সমাচার’ প্রকাশিত হতো । এটিতে সমাজ শিক্ষা কি বা কেন প্রয়োজন ? কুটির শিল্পে এর স্থান কোথায় ? প্রচারিক প্রসঙ্গক্রমে , ‘লোকশিক্ষা’পরিষদের খবর, শাখা কেন্দ্রের খবর প্রভৃতি বিভাগ ছাড়াও  থাকতো বড় হরফের আক্ষরিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা বিষয়ক নানান গল্প, আদিবাসী সঙ্গীত প্রভৃতি । সাইকোস্টাইলে প্রকাশিত এই পত্রিকা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিতারিত  হতো ।

 প্রথম দুটি বর্ষে কোন মূল্য নেওয়া হতো না।  তৃতীয় বর্ষেই মুদ্রিত আকারে প্রকাশ শুরু হল। তৃতীয় বর্ষের ১৯৫৯ সালের জুন সংখায়  ‘লোকশিক্ষা সমাচার’ নামটি অবলুপ্ত হল। সেই স্থানে সমাজশিক্ষা  নামটি জ্বলজ্বল করতে লাগলো।  ৩য় বর্ষ থেকেই মূল্য নির্ধারন শুরু ।

পত্রিকাটির শুভারম্ভ হয়েছিল ১৯৫৭ সালের এপ্রিল মাসে । দশ বছর আগে তখন স্বাধীনতা লাভ করেছে দ্বিখণ্ডিত ব্রিটিশ শাসিত ভারতবর্ষ। একটি স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক দেশের শরণার্থী বিপর্যস্ত ও দারিদ্রে পর্যুদস্ত – ক্ষুদ্র রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের সমাজ ও মানুষের সার্বিক উন্নতি ও প্রসারের উদ্দেশে শুরু এক অভিনব মাসিক পত্রিকা সমাজশিক্ষা।

প্রথমে বয়স্ক মানুষদের লুপ্ত আত্মবিশ্বাস পুনরুদ্ধারের জন্য  নেওয়া হল কতকগুলি সহজ পদক্ষেপ । অল্প শিক্ষিত গ্রামের মানুষদের সাক্ষর করার লক্ষে এবং  বয়স্ক শিক্ষায় আগ্রহ জাগানোর জন্য সমাজশিক্ষায় প্রকাশিত হল বারো অক্ষরের কিষান ভাইয়ের কথা। এখানেই থেমে থাকলো না। গ্রামের উন্নতির জন্য নিরক্ষরতা দুরীকরণের জন্য রচিত হল বৈচিত্রপূর্ণ রচনা, অতি সহজ ও সরল ভাষায়  পৌছে  দেওয়া শুরু হল গ্রামের মানুষের কাছে। গ্রামের মানুষদের নিয়ে শুরু হল গ্রামের সংগঠন। তাদের দিয়েই শুরু হল গ্রামের উন্নতির প্রচেষ্টা। নিরক্ষর মানুষের সাক্ষরতা অর্জনের পর  প্রয়োজন হল সাক্ষরোত্তর  পথ্য দানের উপকরন সরবরাহ। এই ধরনের পুস্তকের খুবই অভাব , তাই লোকশিক্ষা সমাচারে প্রকাশিত হতে থাকলো নতুন নতুন পাঠমালা। পরে সেগুলি পুস্তিকাকারে প্রকাশিত হল। এগুলির মূল্যবোধ ও জনপ্রিয়তা আজও তুঙ্গে।

‘গ্রামের কল্যাণ দেশের কল্যাণ ’- এই ভাবনাকে সম্বল করে সমাজশিক্ষার লোকশিক্ষা তরতর এগিয়ে চলল । দেশের প্রাচীন ধরা ও বৈশিষ্টকে ধরে রেখেছে গ্রাম বাংলা । এই গ্রামের উন্নতি মানেই দেশের উন্নতি। মনে রাখতে হবে প্রগতির অর্থ মিল আর বড় বড় বিল্ডিং নয়। গ্রামের দোষ বা ত্রুটি অর্থাৎ অশিক্ষা, দারিদ্র, অপুষ্টি , অস্বাস্থ্য  , অনাশ্রয় প্রভৃতি দুর্বলতাগুলির সঙ্গে লড়তে হবে। সকলের জন্য খাদ্য বস্ত্র শিক্ষা ঔষধ, আশ্রয় – এর ব্যবস্থা গড়ে উঠুক । কিন্তু যে অধ্যাত্মসম্পদ মানুষের নৈতিকতা ও মনুষ্যত্বকে নিয়ন্ত্রিত করছে তাকে সযত্নে রক্ষিত করবার জন্য ‘সমাজশিক্ষা’ তার সীমিত সামর্থে আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালাতে লাগলো।


Samaj-Siksha is a 66 years old monthly Bengali magazine on Rural Development and Agriculture, of Ramakrishna Mission Lokasiksha Parishad, Narendrapur, Kolkata 700 103, India.
Ramakrishna Mission Lokasiksha Parishad is an integrated rural and urban development unit of the Ramakrishna Mission Ashrama, Narendrapur (www.rkmvnarendrapur.org) , Kolkata 700 103 which is a branch centre of the Ramakrishna Mission, Belur Math (www.belurmath.org), Howrah, West Bengal registered under the Societies Registration Act XXI of 1860 and revised according to West Bengal Societies Registration Act XXVI of 1961 bearing Registration No.1917/3 of 1909-10 dated 4th May 1909


Temple Ramakrishna Mission Ashrama, Narendrapur